নিজেদের সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর ছেড়ে দিয়েছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র ব্যানারে নির্বাচিত এমপিরা। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের তাকে এ দায়িত্ব দেন তারা। বৈঠকে থাকা একাধিক এমপিরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।
বৈঠক থাকা একাধিক স্বতন্ত্র এমপির সাথে কথা বলে জানা যায়, বৈঠকে নিজেদের সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব দেন স্বতন্ত্র ব্যানারে নির্বাচিত এমপিরা। তারা দলীয় প্রধানের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা সবাই ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। আমরা সবাই আওয়ামী লীগের নীতি-আদর্শে বিশ্বাসী। কাজেই সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার আমরা আপনার (শেখ হাসিনা) উপর দিতে চাই। আমরা আশা করি, যারা ভালো ও যোগ্য আপনি তাদের সংরক্ষিত আসনে দায়িত্ব দেবেন।
এসময় স্বতন্ত্র এমপিদের কথায় সমর্থন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদিও বৈঠকের প্রথমে এই বিষয়ে কোনো কথাই বলেননি শেখ হাসিনা। তবে এ বিষয়ে আলোচনা তোলেন স্বতন্ত্র এমপিরা। স্বতন্ত্র এমপিদের সংসদে গঠনমূলক সমালোচনা করার নির্দেশ: স্বতন্ত্র ব্যানারে নির্বাচিত এমপিদের জাতীয় সংসদে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় তিনি স্বতন্ত্র এমপিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা (স্বতন্ত্র) এমপি হওয়ায় সুবিধা আছে। বেশি বেশি কথা বলতে পারবেন। কারণ যারা সরাসরি সরকারদলীয় এমপি তাদের সংসদে কথা বলার সুযোগ কম। সেখানে আপনারা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারবেন। সরকারের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিতে পারবেন। সরকার কি করলে জনগণের ভালো হবে সেগুলো নিয়ে কথা বলবেন। যেসব এমপিরা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। তাদের সাথে স্বতন্ত্র এমপিদের মিলেমিশে কাজ করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা যারা নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন, সবাই এক সাথে মিলে মিশে কাজ করবেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে প্রায় সব স্বতন্ত্র এমপিই কথা বলেন এবং তারা নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এর আগে বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অগ্নি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব প্রকল্প দেশের মানুষের জন্য অর্থবহ, সেসব প্রকল্পই গ্রহণ করা হয়। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। সংসদের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সংসদ প্র্যাকটিস ভালো করে জানা, বাংলাদেশের ইতিহাস জানা এবং সংবিধান আত্মস্থ করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সংসদ কার্যপ্রণালী বিধি পড়তে হবে। আমাদের সংসদ ওয়েস্ট মিনিস্টার টাইপ পার্লামেন্ট। কাজেই সংসদ প্র্যাকটিস ভালো করে জানতে হবে। স্বতন্ত্র সাংসদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনি এলাকায় কেউ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকলে তাদের জন্য ঘর তৈরি করে দেয়া হবে।