শীতজনিত নানা সমস্যা নিয়ে ভিড় বাড়ছে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক।
সাতাশ দিনের মেয়েকে নিয়ে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে এসেছেন পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ইশতিয়াক আহমেদ রানা; মেয়ে তার জ্বরে ভুগছে।
ভিড়ে ঠাসা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দেখা গেল ইশতিয়াক ও রাশেদা বেগম দম্পতিকে। কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড শীতে শিশু মেয়েটার নিউমোনিয়া ধরে গেলে কিনা, তা নিয়ে তাদের দুঃশ্চিন্তা।
কাছে গিয়ে সমস্যার কথা জানতে চাইতেই ইশতিয়াক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, “ঢাকায় এ বছরের মত প্রচণ্ড শীত আর আমি অনুভব করিনি৷ আমার মেয়েটা শীতে কাবু হয়ে গেছে। নিউমোনিয়া না হলেই বাঁচি।”
ইশতিয়াকের মত অনেকেই সন্তানদের নিয়ে এসেছেন মিটফোর্ড হাসপাতালে, আছেন বয়স্করাও। শয্যা খালি না পেয়ে কেউ পাটি আর কাথা-কম্বল নিয়ে বসে পড়েছেন বারান্দা আর সিঁড়িতে।
রাজধানীসহ সারা দেশেই দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তীব্র ঠান্ডায় নাকাল মানুষ। শীতজনিত নানা সমস্যা নিয়ে দেশের জেলা হাসপাতালগুলোর সঙ্গে ভিড় বাড়ছে ঢাকার হাসপাতালগুলোতেও। তাদের বেশিরভাগই শিশু আর বয়স্ক।
পৌষের শেষ সপ্তাহ থেকে থার্মোমিটারে পারদ ক্রমশ নিচে নামছে। মাঘের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিন সকালে রাজধানীতে সূর্যের দেখা মিললেও ঘন কুয়াশা আর হিম হাওয়ায় কাঁপছে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসাপাতালে এলেও রোগীর চাপে চিকিৎসা পেতেও বেগে পেতে হচ্ছে।
রোগীরা বলছেন, শীতের সঙ্গে ঠান্ডা বাতাসে হাড়ে কাঁপুনি ধরে। মেঝেতে কিংবা বারান্দায় যারা আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের অবস্থা আরও নাজুক।
মঙ্গলবার সকালে মিটফোর্ড হাসপাতালের বহির্বিভাগের সিঁড়ির সামনে এক শিশুকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন রোজিনা বেগম। কেরানীগঞ্জ থেকে নৌকায় নদী পার হয়ে রিয়াদ ও জিহাদ নামে ৩ মাস ১৪ দিন বয়সের যমজ ভাতিজিদের নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন তিনি।