প্রথমবার মাল্টা চাষ করেই সফলতা পেয়েছেন মোঃ কামরুল হক (৩২)। তার বিশাল বাগানের প্রতিটি গাছেই থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ জাতের বারি-১ জাতের মাল্টা। মাল্টার ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালগুলো।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের সগুনা গ্রামের মোঃ কামরুল হকের মাল্টার বাগানে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। ২০২০ সালে অনাবাদি পতিত দুই বিঘা পতিত জমিতে মাল্টার গাছ লাগিয়েছিলেন মোঃ কামরুল হক। ওই পতিত জমি প্রস্তুত, রাসায়নিক ও জৈব সার দিয়ে শ্রমিক খরচসহ এ পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে দুই লাখ টাকা। বর্তমানে বাগানে ১ শতাধিকের বেশি চারা রয়েছে। চারা রোপণের দুই বছরেই মাল্টার বাজারজাতকরণ করতে পেরেছেন।
প্রথমবার মাল্টা বিক্রি হয় ১ লাখ টাকার বেশি। তবে এ বছর যে পরিমাণ মাল্টার ফলন হয়েছে, তাতে ২ থেকে ৩ লক্ষাধিক টাকার অধিক বিক্রি করতে পারবেন। তাতে এ বছরই তার খরচ উঠে আসবে। মোঃ কামরুল হকের মাল্টার বাগান ঘুরে দেখা গেছে, মাল্টার ওজনে প্রতিটি গাছের ডাল নুয়ে পড়েছে। আকারে যেমন বড় তেমন দেখতেও আকর্ষণীয়। দেখে বোঝা গেল, বাগানের অনেক বেশি যত্ন নিয়েছেন তিনি। কামরুল হক জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর যে পরিমাণ ফলন হয়েছে, তাতে তার সব খরচ মিটিয়ে লাখ টাকা লাভবান হবেন। আগামী বছর ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার অধিক বিক্রি করবেন বলে আশাবাদী তিনি।
কামরুল হক আরও বলেন, আমাকে মাল্টা চাষে উদ্ধত করেছেন আমাদের কৃষি অফিসের লোকজন। গ্রামে আমার পতিত জায়গায় কৃষি অফিস থেকে কিছু চারা নিয়ে প্রথমে শুরু করি। পরবর্তীতে দেখি গাছের ধরন বেশ ভালো। পরে আরও কিছু চারা কিনে আনি। আমার মাল্টা খুবই সুস্বাদু হবে। আমি সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অক্টোবরের শুরুর দিকে বাজারে তুলবো, এতে রসালো হবে। সুস্বাদু, রসালো ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় বাজারে এই মাল্টার ব্যাপক চাহিদা থাকবে।
মাল্টা বাগানের পরিচর্যাসহ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন কামরুল হকের বাড়ির লোকজন। তিনি জানান, শুরু থেকেই খুব যত্ন নিয়েছেন। গত বছরেও ভালো ফলন হয়। এ মাসের শেষের দিকে মাল্টার বাজারজাত করা যাবে।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কৃষক কামরুল মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। ফলটি পুষ্টিকর বিশেষ করে রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। ওনার বাগানে এ বছর যে পরিমাণ ফলন হয়েছে, তাতে তিনি অনেক বেশি লাভবান হবেন। ওনার মাল্টা বাগানের গাছ প্রতি ১৫-২০ কেজি হারে বাজারজাত করতে পারবে। কমপক্ষে ১০০ টাকা করেও যদি বিক্রি করেন তাহলেও প্রতি গাছে ২ হাজার টাকার বেশি লাভবান হবেন।
তিনি আরো বলেন, অন্যান্য কৃষি ফসলের পাশাপাশি সুস্বাদু পুষ্টিকর রসালো ফল মাল্টা বারি-১ চাষে ঝুঁকছেন তাড়াশ উপজেলার কৃষকরা।
ঝর্ণা আক্তার/ আজকের সিরাজগঞ্জ