সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গণহারে করা হচ্ছে পুকুর খনন, এমনি ব্যাক্তিমালিকানা এ সকল পুকেরে পাড় না দিয়ে সরকারি পাকা রাস্তা কে পুকুরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে সরকারি গুরুত্বপুর্ন রাস্তা গুলোর বিভিন্ন স্থানে ধ্বসে পড়ে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যহত হচ্ছে যান চলাচল, বৃদ্ধি পেয়েছে জনদুর্ভোগ। এ ছাড়াও এসব স্থানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরব থাকায় সরকারের ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
সম্প্রতি তাড়াশ-কাউরাইল, খুটিগাঁছা-নওগাঁ বাজার, তাড়াশ-বারুহাস ও বিনোদপুর-বস্তুল রাস্তায় গিয়ে অসংখ্য ভাঙ্গনের চিত্র দেখা গেছে। বেশি আলোচনায় এসেছে তাড়াশ পৌর শহরের নাকের ডোগায় তাড়াশ-কাউলাইল সড়ক।
শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে তাড়াশ-কাউরাইল রাস্তায় ভাঙ্গনের স্থলে ছবি তুলতে গিয়ে বেশ কয়েকজন পথচারীর সাথে কথা হয়। সকলেই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা সহ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদিকে বিহঙ্গ সাংস্কৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শেখসাদী সোহাগ বলেন, ব্যাক্তি স্বার্থে যারা পুকুরের পাড় হিসেবে সরকারি রাস্তাকে ব্যবহার করছেন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতই প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অন্যথায় আমরা সাংগঠনিক ভাবে অচিরেই মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহন করবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলা আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ উপজেলায় অভ্যান্তরীন কাঁচাপাকা মিলে মোট রাস্তা রয়েছে ৬৮০ কিলোমিটার। এর মধ্যে কাঁচা রাস্তা রয়েছে ৩৯২ কিলোমিটার, পাকা রাস্তা ২৩৯ কিলোমিটার, ব্রিক সোলিং ২৪ কিলোমিটার ও আরসিসি ২১ কিলোমিটার।
উল্লেখিত রাস্তার পাশে নির্বিচারে পুকুর খনন করে পুকুরের মালিকগণ রাস্তাকেই পুকুরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করছেন। যারফলে অতিরিক্ত মাল বোঝাই গাড়ি চলাচল, বৃষ্টি বা বর্ষার পানির চাপে রাস্তা ধ্বসে পুকুরে নেমে যাওয়ায় গর্ত সহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এসব পুকুরের পাড় ধ্বসের কারণে পাকা রাস্তা রক্ষা করতে এলজিইডি কর্তপক্ষ তাদের নতুন পরিকল্পনায় গাইড ওয়াল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে। এতে সরকারের অতিরিক্ত ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। অথচ পুকুরের পাড় হিসেবে ব্যবহার বেআইনি হিসেবে প্রশাসন তৎপর হলে সরকারের অতিরিক্ত এ আর্থিক ক্ষতি হতো না।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো: ফজলুল হক ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে বলেন, এলাকার জনগণ সচেতন না হলে তাদের তেমন কিছু করার নেই। তবে টেকসই রাস্তা নির্মাণে কি কি পদক্ষেপ নেয়া যায়, তা আমরা যাচাই করে দেখছি।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মি. সুইচিং মং মারমা বলেন, মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বেশ কিছু পুকুর মালিক কে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আর্থিক জরিমানা সহ বিভিন্ন মেয়াদে দন্ড দেয়া হয়েছে।
ঝর্ণা আক্তার/ আজকের সিরাজগঞ্জ