শিরোনাম
সিরাজগঞ্জে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ও প্রশমন দিবসের সন্মাননা স্মারক গ্রহণ করলেন স্কাউট সদস্য আবীর কামারখন্দে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কৃষক নিহত জাহান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে কাটাখালী নদী সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন তাড়াশে বিএনপির আয়োজনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত উল্লাপাড়ায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির আলোচনা সভা নুর কায়েম সবুজের নেতৃত্বে রজব আলী কলেজের নতুন অধ্যায় তাড়াশে জাতীয় যুব দিবস পালিত আওয়ামীলীগ চারিত্রিক ভাবেই ফ্যাসিস্ট- বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য টুকু সিরাজগঞ্জে পুলিশের নিয়োগ পদে দ্বিতীয় দিন সম্পন্ন সিরাজগঞ্জে অবৈধভাবে এলজিইডি রাস্তার গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন

গাছের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময় এখনই

রিপোর্টারের নাম / ৬৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট: বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪

বিশেষ প্রতিবেদক:
চলতি বছর প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের সময় সবাই গাছ লাগানোর বিষয়ে সরব হয়ে উঠেছিলেন। অনেকেই ওই তাপপ্রবাহের মধ্যেই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে, তা সময়ই হয়তো বলে দেবে। আমরা জানি, সাধারণত জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে গাছের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। এ সময় আলো-বাতাস, অনুকূল তাপমাত্রা, বৃষ্টি পর্যাপ্ত থাকে বলে চারাও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

‘গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান’ স্লোগানটি বাংলাদেশের বহুল প্রচলিত একটি স্লোগান। প্রতি বছরই এ কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রকৃতিপ্রেমীরা গাছের চারা রোপণ করেন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করেন। এ বছর তাপপ্রবাহের জন্য বনাঞ্চল ধ্বংস, গাছ কেটে ফেলাকে দায়ী করা হয়। ফলে নতুন করে গাছের চারা রোপণে জোর দেওয়া হয়।

একই সঙ্গে ভবনের ছাদে বাগান করে শহরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব বলেও মনে করেন পরিবেশবিদরা। কেননা ছাদের বাগান বাইরের তাপমাত্রার চেয়ে ঘরের তাপমাত্রা প্রায় ১.৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস করতে পারে। বাগানসহ ছাদের তাপমাত্রা ও বাগানবিহীন ছাদের তাপমাত্রার পার্থক্য প্রায় ৭.৮৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অব্যবহৃত ছাদে খুব সহজেই পরিকল্পিতভাবে ফুল, ফল ও শাক-সবজির বাগান তৈরি করা হয়। এতে পারিবারিক ফুল, ফল ও শাক-সবজির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা যায়।

এখন কথা হচ্ছে, গাছের চারা কখন লাগাবো? যখন-তখন রোপণ করলেই কি সুফল মিলবে? মূলত চারা রোপণের পর চারা টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য প্রথমেই উপযুক্ত সময় বেছে নিতে হবে। এ ছাড়া গরু, ছাগল বা অন্য তৃণভোজী প্রাণীর হাত থেকে চারাকে রক্ষা করার ব্যবস্থা নিতে হবে। চারা রোগাক্রান্ত হলে বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় বনকর্মী বা কৃষিকর্মীর পরামর্শ নিতে হবে।

অপরদিকে গাছের চারা লাগানোর পর প্রয়োজনীয় সার দেওয়া জরুরি। সঠিকভাবে চারা বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত আলো-বাতাস। প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত আলো-বাতাসে গাছ খুব দ্রুত বাড়ে। যে কোনো জাতের গাছের জন্য এটি খুবই জরুরি। তাই বাড়িতে এমন স্থানে গাছ লাগান বা রাখুন; যেখানে নিয়মিত আলো-বাতাস পাওয়া যায়।

যেহেতু যে কোনো দেশের আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা জরুরি। আমাদের জাতীয় সংসদে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী দেশের মোট আয়তনের ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ এলাকায় বনভূমি আছে বলে জানিয়েছেন। তাই আমাদের বনভূমিকে আরও বাড়াতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ফলে দেশে পরিবেশ মেলা, বৃক্ষমেলা, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি, বসতবাড়ি বনায়ন কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, ফলদ-বনজ-ভেষজ বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম এবং ফলদ বৃক্ষমেলার আয়োজন করা যেতে পারে।

বাংলাদেশে গাছের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় বিবেচনা করা হয় বর্ষাকালকে। তবে রোপণের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে সারাবছরই ‘চারা-কলম’ লাগানো যায়। কৃষি তথ্য সার্ভিস জানায়, প্রথম বৃষ্টির পরপরই চারা লাগানো উচিত নয়। কারণ প্রথম কয়েকদিন বৃষ্টির পরপরই মাটি থেকে গরম গ্যাসীয় পদার্থ বের হয়। যা চারা গাছের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এমনকি গাছের চারা মারা যায়।

তাই বলা হয়, যে কোনো গাছের চারা রোপণ করার উপযুক্ত সময় দিনের শেষভাগে অর্থাৎ পড়ন্ত বিকেল। সুতরাং সময়-সুযোগ বুঝেই গাছের চারা রোপণ করা উচিত। এ ক্ষেত্রে গাছ নির্বাচন করতে হবে স্থান ও পরিবেশ বুঝে। যেমন- যে গাছে পাখি বসে না, বাসা বাঁধে না; সেসব গাছ লাগাতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

বাড়ির সামনের খোলা জায়গায় সৌন্দর্যবর্ধক হিসেবে ফুল গাছ লাগাতে পারেন। আবার ফলদ গাছ হলে তা পাখিসহ অন্য প্রাণীর জন্যও আশ্রয় ও খাবারের উৎস হতে পারে। তবে আম-কাঁঠালের পাশাপাশি কড়ই, শালের মতো গাছও ছায়া দেয়। এগুলো বাঁচেও দীর্ঘদিন। এরা গরমে যেমন প্রশান্তি দিতে পারে; তেমনই দীর্ঘদিন অক্সিজেন সরবরাহও করতে পারে।

মূল কথা হচ্ছে, অঞ্চলভেদে গাছের ধরন পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন- মধুপুর বা ভাওয়াল এলাকায় শাল গাছের উপস্থিতি বেশি। এ ছাড়া রেইনট্রি, সেগুন, আকাশমণি, আকাশিয়া, শিশু, বাবলা ও ইউক্যালিপটাস জাতীয় গাছের জন্য প্রচুর জায়গা দরকার। এগুলো দেশি গাছের তুলনায় অনেক দ্রুত বেশি পুষ্টি মাটি থেকে শুষে নেয়। তাদের সঙ্গে অন্য গাছ বাঁচতে পারে না। ফলে এভাবে যেন জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্ট না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

তাই আসুন, এই বর্ষায় বেশি বেশি গাছের চারা রোপণ করি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এগিয়ে আসি। অতিরিক্ত তাপ প্রতিরোধে প্রত্যেকেই এগিয়ে আসি। এ বছর আশানুরূপ গাছের চারা লাগাতে পারলে হয়তো ভবিষ্যতে তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পাবো। পরিবেশ হবে শীতল। সবুজে সবুজময়।

 

ঝর্ণা আক্তার/ আজকের সিরাজগঞ্জ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর