চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়ার নিচু এলাকায় এখন নতুন বানের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। দিন দিন বাড়ছে বানের পানি। বর্ষা ঋতুর আগমণে তাই নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা। দিনরাত তৈরী করছেন নৌকা। নতুন নৌকার পাশাপাশি অনেকে আবার পুরাতন নৌকা মেরামতের জন্য ছুটছেন তাদের কাছে। বছরের আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস থেকে কার্তিক পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ মাস বন্যা কবলিত এই অঞ্চলের বেশির ভাগ গ্রাম ও পথ ঘাটের যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। এসময় এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম যাতায়াত,হাট-বাজার ও মাছ ধরার কাজে একমাত্র বাহন হয় নৌকা। তাই বেড়ে যায় নৌকার কদর।
সরেজমিনে উপজেলার সাতপুকুরিয়া, ডাহিয়া ও বিয়াশ বাজার ঘুরে দেখা যায় নৌকা তৈরীর কারিগররা নতুন নৌকা তৈরী ও পুরাতন নৌকা মেরামত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কারিগররা বলছেন, নৌকা তৈরীর কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
সাতপুকুরিয়া বাজারে তিনটি পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ করছেন রফাত নামের এক কাঠ মিস্ত্রি। তিনি জানান, সারা বছর কাঠের কাজ করেন। বর্ষার এই সময়ে নৌকা তৈরীর কাজে ব্যস্ত থাকেন। এতে তার বাড়তি কিছু আয় আসে।
বিয়াশ বাজারে নৌকা তৈরীর কারখানার মালিক গোদা কুমার জানান, আমরা অর্ডার নিয়ে নৌকা তৈরী করছি। আমার কারখানায় ৫ জন কারিগর আছে। ‘কড়ই, হিজল ও মেহগনির কাঠ দিয়ে বেশিরভাগ নৌকা তৈরি করি। এছাড়া আলকাতরা, তারকাটা ও গজল সহ বিভিন্ন উপকরণ লাগে। এবছর ৭০ টি নতুন নৌকা তৈরী করেছি। এসব বেশির ভাগই ছোট ডিঙি নৌকা যার অধিকাংশই মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়।
কারখানার মালিক গোদা কুমার আরো জানান, আকার ভেদে ছোট ডিঙি নৌকা তৈরীর মজুরি হিসাবে ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা টাকা নেই। কাঠ সহ অন্যান্য সরঞ্জাম নৌকার মালিক দেন। কাঠের গুনগত মান ও আকৃতি বুঝে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা করে প্রতিটি নৌকার খরচ পড়ছে। এবছর আরো ১০ টি নতুন নৌকার অর্ডার পেয়েছি। নৌকা তৈরীর কাঠ সহ লৌহ ও অন্যান্য সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের চেয়ে খরচ বেশি লাগছে।